ঢাকা ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

সতর্কতা সংকেত প্রত্যাহার

কক্সবাজারে  মাছ ধরতে সাগরে যাচ্ছে ট্রলার

কক্সবাজারে  মাছ ধরতে সাগরে যাচ্ছে ট্রলার

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বঙ্গোপসাগরে টানা ৩দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকার পর গতকাল রোববার বিকেল থেকে ফের মাছ ধরা শুরু হয়েছে। কক্সবাজারসহ দেশের ৪টি সমুদ্র বন্দরের উপর গত বৃহস্পতিবার থেকে জারি করা আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কতা সংকেত রোববার সকালে প্রত্যাহারের পর কক্সবাজারের মাছ ধরার ট্রলারগুলো ফের সাগরে রওয়ানা দেয়।

জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জানান, গত বৃহস্পতিবার সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চারনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত থাকায় এর প্রভাবে ঝড়ো হাওয়ার আশঙ্কায় সমুদ্রবন্দরসমূহে ৩নং সতর্কতা সংকেত জারি করে আবহাওয়া দপ্তর। ফলে কক্সবাজারের ট্রলারগুলো সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রেখে ঘাটে ফিরে আসে। ৩দিন পর রোববার আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সমুদ্রবন্দরসমূহের উপর সকল সতর্কতা সংকেত তুলে নেয় আবহাওয়া দপ্তর। এরপর কক্সবাজারের মাছ ধরার ট্রলারগুলো ফের সাগরে রওয়ানা দেয়।

রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত কক্সবাজারের ৯৫% ট্রলার সাগরে গেছে। বাকী ট্রলারগুলোও যান্ত্রিক ত্রুটি সারিয়ে আজ সোমবার বা কাল মঙ্গলবারের মধ্যে মাছ ধরতে সাগরে বলে আশা করেন ফিশিং বোট মালিক সমিতির এই নেতা।

কক্সবাজার জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির মতে, কক্সবাজারে ছোট বড় ৭ হাজারের বেশি ইঞ্জিন ট্রলার রয়েছে। এরমধ্যে বড় নৌকায় ৩০ থেকে ৪০ জন এবং ছোট নৌকায় ৫ থেকে ১৭ জন জেলে থাকে। আবার কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়ানগর ঘাটের ইঞ্জিনবিহীন ককশিটের বোটে থাকে মাত্র ২ জন জেলে। ট্রলারগুলোর মধ্যে ইলিশ জালের বোটগুলো ৮/১০ দিনের রসদ নিয়ে এবং তাইল্যা জালের বোটগুলো এক সপ্তাহের রসদ নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যায়।

বঙ্গোপসাগরে বিভিন্ন ধরনের জাল দিয়ে মাছ ধরা হয়। এরমধ্যে ইলিশ ধরা হয় ৪ থেকে ৫ আঙুলের ফাঁসযুক্ত সুতার জাল দিয়ে, যেটি ভাসা জাল নামেই জেলেদের কাছে পরিচিত। আর সাগর থেকে তাইল্যা ও কোরাল মাছ ধরা হয় ২ থেকে ৩ আঙুলের ফাঁসযুক্ত এক ধরনের রক জাল দিয়ে, যেটি তাইল্যা জাল নামেই পরিচিত। এছাড়া চাউপ্পা জাল, ডোবা জাল, চামিলা জাল ও চোখফোলা জালের বোটগুলো মাত্র একদিনের রসদ নিয়ে সাগরে যায় এবং মাছ ধরে দিনে দিনেই ফিরে আসে। এই ধরনের জালের বোটগুলো সাগর উপকূলে ছোট প্রজাতির মাছ ধরে, যাকে স্থানীয় ভাষায় ‘পাঁচকাড়া’ (পাঁচ প্রকারের) মাছ বলা হয়। এই ধরনের বোটগুলোতে একেক মৌসুমে একেক প্রজাতির মাছ বেশি ধরা পড়ে।

কক্সবাজার শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারীঘাট মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী বলেন, রোববার বিকেল থেকে কক্সবাজারের সকল ধরনের ট্রলার সাগরে মাছ ধরতে গেছে। তবে ইলিশ জালের বোটগুলোর গভীর সাগর থেকে মাছ ধরে ঘাটে ফিরতে আরো ৪/৫ দিন সময় লাগবে।

এদিকে সোমবার (৭ অক্টোবর) সকালে কক্সবাজার ফিশারি ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, কিছু কিছু ট্রলার ইলিশসহ নানান ধরণের মাছ নিয়ে ফিরেছে। তবে ইলিশের দাম একটু বেশি। ৩০০ গ্রাম ওজনের একটি ইলিশের দাম নিচ্ছে ৭০০ টাকা। ১ কেজি থেকে ১১০০ কিংবা ১২০০ গ্রাম ইলিশ ১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় আকারের রূপচাঁদা ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ টাকা আর ফুলপোয়া ৪০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

কম সরবরাহের কারণে মাছের দাম একটু বেশি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, জেলেদের কাছ থেকে মাছগুলো কিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠাতে খরচ বেশি পড়ায় দামও একটু বেশি।

কক্সবাজার জেলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক ও নির্বাহী প্রকৌশলী জিএম রাব্বানী বলেন, সতর্ক সংকেত না থাকায় বেশি ট্রলার সাগরে মাছ শিকারে গেছে। আশা করি কাঙ্খিত ইলিশ ও অন্যান্য মাছ নিয়ে তারা ঘাটে ফিরবে।

দুর্যোগ,কক্সবাজার
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত